নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কিছু প্রস্তাব নিয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান, ইসলামী চিন্তাবিদ, ওলামায়ে কেরাম, গবেষক ও সচেতন নাগরিকগণ গভীর উদ্বেগ জানালেও সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এই প্রেক্ষাপটে সাধারণ আলেম সমাজ সরকারের নীরবতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সাধারণ আলেম সমাজের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগ তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুসলিম পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন বাতিল, অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন এবং সিডও (CEDAW) ভিত্তিক কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাব ধর্মীয় মূল্যবোধ, সংবিধান স্বীকৃত ধর্মীয় অধিকার এবং দেশের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
তারা বলেন, “এইসব বিতর্কিত সুপারিশ নিয়ে জনমনে যে ক্ষোভ ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তা উপেক্ষা করে সরকারের নীরবতা আরও বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এতে অনেকেই ভাবছেন, সরকার কি তবে নীরবভাবে এসব প্রস্তাব অনুমোদনের দিকে এগোচ্ছে?”
তারা আরও মন্তব্য করেন, “জনগণের একটি বড় অংশ এখনও সরকারের ওপর আস্থা রাখছে এই বিশ্বাসে যে, সরকার ধর্মীয় ভারসাম্য ও সামাজিক সম্প্রীতির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। কিন্তু যদি এনজিও এবং ধর্মবিরোধী গোষ্ঠীর পরামর্শে একতরফাভাবে আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে তা জাতীয় সংকট সৃষ্টি করতে পারে।”
বিজ্ঞপ্তিতে ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন এনজিওকর্মী ও তথাকথিত উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের দিকেও কঠোর সমালোচনা ছুড়ে দেওয়া হয়। বলা হয়, “তারা আন্তর্জাতিক পরিসরে কথাবার্তা বলতে পারলেও, দেশের ধর্মপ্রাণ জনতার কাছে দায়মুক্ত নন।”
সাধারণ আলেম সমাজ তিন দফা দাবিও উত্থাপন করেন—
1. নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের বিতর্কিত সুপারিশসমূহ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
2. কমিশন পুনর্গঠনের মাধ্যমে ইসলামী চিন্তাবিদ, হিজাব পরিহিতা নারী, মাদরাসা সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি এবং সমাজের বাস্তবধর্মী প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
3. জনগণের মতামত ছাড়া পারিবারিক আইন সংস্কারের কোনো প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
বিবৃতির শেষাংশে তারা বলেন, “আমরা এখনো দায়িত্বশীল অবস্থান থেকেই রাষ্ট্রের পাশে আছি। তবে যদি একচেটিয়া ও ধর্মবিরোধী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সৃষ্ট সংকটের দায় সরকারকে নিতে হবে।”